১ম পর্ব
‘ছোটো খোকা বলে অ, আ
শেখেনি সে কথা কওয়া’
কথা অর্থাৎ মনের ভাব প্রকাশের পূর্বে শিশুর মুখে উচ্চারিত হয় এই ধ্বনি। বাংলা বর্ণমালার সাথে হয় শিশুর ‘বর্ণপরিচয়’ শেখা। ধীরে ধীরে চলে শব্দ শেখার কাজ। এরপর শিশু নিজের চিন্তা, কল্পনা ও ভাবনাকে স্বাধীন ভাবে প্রকাশ করতে পারে মাতৃভাষা বাংলার মাধ্যমে। বর্তমানে যুগের চাহিদা ও বাজারমুখি শিক্ষা প্রবর্তনের ফলে শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে বাংলার ব্যবহার কমে আসছে। যার ফলে শিশু শিক্ষার্থীদের প্রকাশ দক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে। যুগের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে প্রাথমিক স্তর থেকেই কীভাবে শিক্ষার্থীদের মনে বাংলা ভাষার গুরুত্বকে বজায় রাখা যেতে পারে তার প্রচেষ্টা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।সে ক্ষেত্রে শিক্ষকদের দায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়। শৈশব থেকে বড়ো হয়ে ওঠার পথে শিক্ষার্থীর মাতৃভাষা তথা বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা সৃষ্টির পথপ্রদর্শক হবেন, শিক্ষক।আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে হবে সাহিত্যপ্রীতি, কবি-সাহিত্যিকদের প্রেরণামূলক জীবন কাহিনী, দেশপ্রেম, সর্বোপরি মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসাবোধ।
প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। এই সময় বাংলা শব্দের ব্যবহার ও তার প্রয়োগে উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসতে হবে বিদ্যালয় ও পরিবার উভয়কেই। শিশু যাতে তার মনের ভাব সহজ সরলভাবে প্রকাশ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।শিক্ষার্থীদের শুদ্ধ চলিত রীতিতে স্বাধীনভাবে বলা,পড়া ও লেখার অনুশীলনে আরও যত্নবান হতে সাহায্য করবেন শিক্ষক। বাংলা পাঠ্যবিষয়বস্তুর মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও শিক্ষক কিছুটা ভিন্ন পথ অবলম্বন করবেন।কারণ অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্নপত্রের মূল্যায়নে জড়িত থাকবে শিশুর সাহিত্যবোধ, ভাষাবোধ এবং ভাবাবেগের প্রকাশ।
শিশুর শিক্ষা যথার্থ ও পরিপূর্ণ তখনই সম্ভব হবে, যখন শিক্ষার্থী তার স্বপ্ন,চিন্তা,কল্পনা এবং সর্বোপরি নিজেকে প্রকাশ করতে সক্ষম হবে বিশ্বের দরবারে। গুরুদেব তাই বাঙালির শিক্ষায় বাংলা ভাষার গুরুত্বের কথা স্বীকার করে বলেছিলেন-” ছেলেবেলায় বাংলা পড়িয়াছিলাম বলিয়াই সমস্ত মনটা চালনা করা সম্ভব হইয়াছিল, শিক্ষা জিনিসটা যথাসম্ভব আহারের ব্যাপারের মতো হওয়া উচিত। খাদ্যদ্রব্যের প্রথম কামড় দিবামাত্রই তার স্বদের সুখ আরম্ভ হয়। পেট ভরিবার পূর্ব হইতেই পেটটি খুশি হইয়া জাগিয়া উঠে,তাহাতে জরক রসগুলির আলস্য দূর হইয়া যায়।বাঙালির পক্ষে ইংরেজি শিক্ষায় এটি হবার জো নাই।”… READ MORE